নরওয়ের জয় শুধু মাঠেই নয়, মানবতাতেও প্রমাণিত
ইউরোপের উত্তরাঞ্চলের দেশ নরওয়ে আবার প্রমাণ করেছে, সত্যিকারের জয় শুধু ফুটবলের মাঠে নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও আসে। ১১ অক্টোবর, বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ইসরায়েলের বিপক্ষে নরওয়ে কেবল ৫–০ গোলে জয়ী হয়নি, বরং গাজার মানুষের প্রতি সহমর্মিতার এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও দিয়েছে।
ম্যাচের আগে নরওয়ের ফুটবল ফেডারেশন ঘোষণা দেয় যে ম্যাচ থেকে প্রাপ্ত সমস্ত আয় দেওয়া হবে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা “ডক্টরস উইদআউট বর্ডারস”-কে, যারা গাজার মানুষের জন্য জরুরি চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। ম্যাচ শেষে তারা এই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছে, ফুটবলকে মানবতার প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত করেছে।
শুধু তাই নয়, নরওয়ের অনেক স্পনসর আরও এগিয়ে এসে অতিরিক্ত ৩,৫০,০০০ মার্কিন ডলার দান করেছেন। এই উদ্যোগ সাধারণ একটি ফুটবল ম্যাচকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবিকতার এক শক্তিশালী বার্তায় পরিণত করেছে।
বছরের পর বছর ধরে নরওয়ের অনেক ফুটবল কর্মকর্তা, খেলোয়াড় ও সমর্থক ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে সমালোচনা করে আসছিলেন, বিশেষ করে ইসরায়েলের সামরিক দখল ও গাজার মানবিক সংকটের প্রেক্ষিতে। তাদের কাছে এই ম্যাচ ছিল এমন একটি সুযোগ, যেখানে তারা ফুটবলের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করতে পারে।
মাঠে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ৫–০ গোলে জয়লাভ করার পাশাপাশি নরওয়ে মানবতার জয়ও নিশ্চিত করেছে। গাজার সংকটের এই সময়ে নরওয়ের উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও মানবিক সংগঠন থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছে। TRT World সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এ উদ্যোগকে উদার ও দৃষ্টান্তমূলক বলে চিহ্নিত করেছে।
এই মুহূর্তটি মনে রাখার মতো, কারণ এটি শুধু একটি ফুটবল ম্যাচ নয়। এটি মনে করিয়ে দেয় যে সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন শুধুমাত্র যিনি গোল করেন না, বরং যিনি নিঃস্বের পাশে দাঁড়ান এবং তাদের জন্য উদ্যোগ নেন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ৫–০ গোলে জয়লাভের মাধ্যমে নরওয়ে দুইবারই জয়ী হয়েছে — একবার খেলায়, একবার মানবতায়। তাদের বার্তা স্পষ্ট:
“আমরা মানবতার পাশে আছি। আমরা গাজার পাশে আছি।”
0 মন্তব্যসমূহ