নেত্রকোণার জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর *রিপন মিয়া*, যিনি সামাজিক মাধ্যমে “রিপন ভিডিও” নামে পরিচিত— অল্প সময়েই লাখো মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তার সহজ-সরল কথাবার্তা, গ্রামীণ জীবনের বাস্তব গল্প, আর সাদামাটা উপস্থাপনায় ভরপুর ভিডিওগুলো যেন সাধারণ মানুষের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি ছিল।
কিন্তু সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সেই জনপ্রিয়তার পেছনের এক চাঞ্চল্যকর সত্য উন্মোচন করেছে। যা জানার পর অনেক ভক্তই হতবাক হয়েছেন।
🏠 মায়ের অভিযোগ: "ছেলে এখন গরিব বাবা-মাকে চিনতেও লজ্জা পায়"
প্রকাশিত প্রতিবেদনে রিপনের মা জানান—
ছেলেকে অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন, কিন্তু আজ রিপন নাকি বাবা-মায়ের পরিচয় দিতেও লজ্জা পান। পুরোনো ভাঙা ঘর ছেড়ে তিনি এখন নতুন পাকা বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন, কিন্তু বাবা-মায়ের খবর নেন না, *ভরণপোষণও দেন না।
তবুও মায়ের কণ্ঠে কোনো রাগ নেই, শুধু অভিমান আর অশ্রু—
“আমাদের আল্লাহ যেভাবে রাখছে রাখুক, সে আরও বড় হোক—এই দোয়াই করি,”
বললেন তিনি, চোখ মুছতে মুছতে।
👨👩👧👦 বাবার আক্ষেপ
রিপনের বাবা জানান, শুরুতে তিনিই রিপনকে ভিডিও বানাতে সাহায্য করতেন। কিন্তু জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ছেলে আর তাঁকে প্রয়োজন মনে করেননি, অন্যদের সঙ্গে কাজ শুরু করেন।
বাবার ভাষায়—
“আমি প্রথমে ছেলেকে সাহায্য করতাম, এখন সে আমাদের দরকার মনে করে না। তাই তার ভিডিও আর দেখি না।”
.jpg)
❌ রিপনের অস্বীকার
অন্যদিকে, প্রতিবেদনে যখন রিপনের কাছে তার পরিবার ও স্ত্রী-সন্তানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়, তিনি সব অস্বীকার করেন।
দাবি করেন—
“আমি বিয়ে করিনি। যাকে আমার স্ত্রী বলা হচ্ছে, তিনি আসলে আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী।”
কিন্তু রিপনের মায়ের বক্তব্যে বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো— তিনি নিশ্চিত করেন, রিপনের এক স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
⚡ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রিপনের পাল্টা অভিযোগ
প্রতিবেদন প্রকাশের পর রিপন নিজের ফেসবুক পেজে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন—
সাংবাদিকরা তার অনুমতি ছাড়াই ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ভিডিও করেছেন।
এই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়, কিন্তু তাতে জনমতের সহানুভূতি তিনি আগের মতো আর পাননি।
💔 জনপ্রিয়তার আড়ালের বাস্তবতা
যাকে আমরা এতদিন “সহজ-সরল” ভেবে মন থেকে ভালোবেসেছিলাম,
যার হাসি আমাদের মন ছুঁয়েছিল — সেই রিপন মিয়া-ই কি আজ অন্য রূপে?
যিনি একদিন মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন, তিনিই আজ *নিজের মা-বাবার হৃদয়ে ফাটল ধরিয়েছেন* বলে অভিযোগ।
ভাইরাল হওয়ার নেশায় মানুষ আজ কী ভয়ংকরভাবে বদলে যাচ্ছে—
এই গল্প তারই বাস্তব উদাহরণ।
🎭 শেষকথা: ইমোশন দিয়ে বিজনেস
আমরা ভেবেছিলাম তিনি সরল, আমরাই ভুল ছিলাম।
আজ মনে হয়, “ভাইরাল” হওয়ার পেছনে অনেক সময় **মানবিকতার জায়গা হারিয়ে যায়**।
আমরা ইমোশন দেই, তারা করে বিজনেস।
আর শেষমেশ আমরা সবাই বোকা হয়ে যাই—
হ্যাঁ, *এইটাই বাস্তবতা।* 😔
0 মন্তব্যসমূহ